ছোট চুল বড় হবে

চুল না বাড়ার প্রধান কারণ পুষ্টিহীনতা। ভিটামিন ও প্রোটিনের অভাব। চুলের রুক্ষতা কিংবা আগা ফাটার সমস্যা থাকলেও চুল বড় হতে চায় না। সঠিক কারণ খুঁজে সমস্যার সমাধান সম্ভব। বিস্তারিত জানাচ্ছেন নভীন’স অ্যারোমার রূপবিশেষজ্ঞ আমিনা হক

চুলের গ্রোথ ফেরাতে প্রথমেই পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। চুলের জন্য প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, মিনারেল ও ভিটামিন প্রয়োজন। প্রতি বেলা খাবারে ভিটামিন ‘এ’ থাকা জরুরি। এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা চুলকে শক্ত ও মজবুত রাখতে সাহায্য করে। দুধ, গাজর, মুলা, সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ থাকে। ভিটামিন ‘সি’র অভাবে চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তাই এ সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন লেবুজাতীয় ফল, পেয়ারা, কামরাঙা, কমলালেবু, জাম্বুরা ইত্যাদি যেকোনো টক ফল খান। এ ছাড়া প্রতিদিনের ডায়েটে শস্যদানা, দুধ, ডিম, কলা, বাদাম, কলিজা, ডাল প্রভৃতি শস্যজাতীয় খাবার রাখুন। এসব খাবারের থাকা জিংক চুলের বৃদ্ধি ও ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। তা ছাড়া এটি মাথার তালুতেও পুষ্টি জোগায়।

খাবারের পাশাপাশি চুলের প্রতি যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দিলেন আমিনা হক। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন চুলে হট অয়েল ম্যাসাজ করলে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হবে। চুলের বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করুন ক্যাস্টার অয়েল। নারকেল, অলিভ, আমন্ড সরিষার তেল পছন্দের যেকোনো তেলের সঙ্গে ক্যাস্টার অয়েল মিশিয়ে নিন। দুই ভাগ তেলের সঙ্গে ক্যাস্টার অয়েলের পরিমাণ হবে এক ভাগ। রাতে শোবার আগে নির্দিষ্ট অনুপাতে তেল মিশিয়ে নিয়ে হালকা গরম করুন। আঙুলের ডগায় তেল লাগিয়ে চুলের নিচ থেকে ওপরে ম্যাসাজ করুন। পুরো মাথায় ম্যাসাজ হয়ে গেলে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত তেল লাগান। এরপর ১০ মিনিট অপেক্ষা করে চুলে ভাপ দিতে হবে। একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে চুলসহ পুরো মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। এভাবে তিনবার চুলে গরম পানির ভাপ দিন। পরদিন গোসলের সময় শ্যাম্পু করে তেল ধুয়ে ফেলুন। ম্যাসাজের ফলে স্কাল্পে রক্তসঞ্চালন ভালো হয়। চুলের গোড়ায় পুষ্টি নিশ্চিত হবে। স্ট্রেইটনার, আয়রন, হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে চুল গোড়া থেকে দুর্বল হয়ে চুলের বৃদ্ধি কমে যায়। সপ্তাহে এক দিনের বেশি কোনো ধরনের স্টাইলিং যন্ত্র ব্যবহার না করা নিরাপদ। দিনে কয়েকবার মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে চুলের বৃদ্ধি ভালো হয়। প্রথমে স্বাভাবিকভাবে সব চুল সামনে থেকে পেছনে আঁচড়ে নিন। তারপর সব চুল উল্টে পেছন থেকে সামনে আঁচড়ান। চুল মোছার জন্য সুতির নরম তোয়ালে ব্যবহার করুন। ভেজা চুল আঁচড়াবেন না। ফ্যানের বাতাসে চুল আধা শুকালে আস্তে আস্তে চুল আঁচড়াতে হবে। সপ্তাহে এক বা দুই দিন হেয়ার প্যাক লাগান। আধা কাপ টক দই, একটি ডিম, ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল এবং ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে নিন। চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগিয়ে আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে নিন। পেঁয়াজের সালফার চুলের বৃদ্ধির সহায়ক। দুই টেবিল চামচ পেঁয়াজের রসের সঙ্গে আধা কাপ নারকেলের দুধ, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চুলে লাগান। এক ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন নিয়মিত ব্যবহারে চুলের বৃদ্ধি হবে।